হেফাজত মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে বাণিজ্য করছে : উলামা পরিষদ

হেফাজত মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে বাণিজ্য করছে : উলামা পরিষদ

হেফাজত মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে বাণিজ্য করছে : উলামা পরিষদ হেফাজত সাম্প্রদায়িক জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে বঙ্গবন্ধু উলামা পরিষদের নেতারা সংগঠনটি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম উগ্র-সাম্প্রদায়িক মানবতাবিরোধী জঙ্গি সংগঠন। বাঙালি মুসলিমদের ঈমান, আকিদা ও ধর্মীয় বিশ্বাস-অনুভূতি নিয়ে করছে বাণিজ্য। বুধবার ( ২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ীর সভাপতিত্বে মানবতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক জঙ্গি সংগঠন হেফাজতকে নিষিদ্ধকরণ ও সংগঠনের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করার দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু উলামা পরিষদের নেতারা এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, হাজার বছরের সম্প্রীতির এই বাংলাদেশে হঠাৎ করে একটি ধর্মীয় সংগঠনে সাম্প্রদায়িক কর্মকান্ডে আমরা অভাগ হয়েছি। এই দেশ সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ মিলে মিশে বসবাস করছে। হেফাজতে ইসলাম ২৪-২৫-২৬-২৭-২৮ মার্চ সমগ্র দেশব্যাপী যে তান্ডব চালিয়েছে তা মানবতাকে চরমভাবে ভূলুণ্ঠিত করেছে মানবতাবিরোধী তো বটেই এটা ইসলাম সমর্থন করে না। অন্যান্য ধর্মও এ তান্ডব সমর্থন করে না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণে হেফাজতে ইসলামের সকল কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করতে হবে।

সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল আলেম-উলামাদেরকেও ঐক্যবদ্ধ করে কাজে লাগাতে হবে। মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আব্দুল আলিম আজাদী, মাওলানা শাইখ আলমগীর হোসাইন, হাফেজ মাওলানা হোসেন জুয়েল, মাওলানা হাফেজ আনোয়ার শাহ, আওয়ামী লীগ নেতা এহাইয়া খান কুতুবী, ন্যাশনাল ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির সভাপতি গণবন্ধু রাহাত হুসাইন, মাওলানা হাফেজ জলিল, মাওলানা মাহমুদুল্লাহ মেরাজ, আলহাজ্ব মোঃ সোহান চিশতী, নাফি উদ্দিন উদয়, শাফি উদ্দিন বিনয় প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জামাতে ইসলামের অনুকরণে। বর্ণে ভিন্ন হলেও আদর্শে দিক দিয়ে সংগঠন দুটি অভিন্ন সত্ত্বায় বিরাজ করছে। হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আহমদ শফিকে হত্যার মধ্য দিয়ে সংগঠনটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জঙ্গীরা দখলে নিয়েছে। যার নেপথ্যে রয়েছে ৭১’র ঘাতক চক্র জামায়াত-বিএনপিসহ স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।

স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের সমষ্টিগত নাম হচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। জামায়াতে ইসলামের সাথে যেমন সম্পর্ক নেই তেমনি হেফাজতের সাথে ইসলামের মূল আদর্শের সম্পর্ক নেই। তিনি আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের কতিপয় নেতা দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পরেছে। হেফাজতে ইসলামের নেতাদের অস্বাভাবিক লেনদেনের কারণে তাদের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করতে হবে। তাদের কাছে ইসলামও নিরাপদ নয়। ই

সলামের লেবাস লাগিয়ে হেফাজতে নেতারা নারী কেলেঙ্কারিসহ, দেশবিরোধী চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, ধোঁকা, সরকারি সম্পদ ধ্বংস, মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালাও পোড়াও করছে। নারীদের ইজ্জত লুটতেও তারা ধর্মের ব্যবহার করছে। মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা হেফাজতে ইসলামের সমর্থকদের চিহ্নিত করে তাদের সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।

মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু উলামা পরিষদের নেতারা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ধর্ম ব্যবসায়ীদের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ওপরে ভর করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা করছে। হেফাজতে ইসলাম ধর্মের নামে বাঙালি মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা করেছে। হেফাজতে ইসলামের আড়ালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী শিবির ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশে জ্বালাও পড়াও শুরু করেছে। এদেরকে রুখতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষের আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি। সরকারকে এই বিষয়ে দায়িত্বশীলতার ভূমিকা নিতে হবে।

 

https://bm24tv.net/

হেফাজত মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে বাণিজ্য করছে : উলামা পরিষদ

কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ) ।

তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৩ দিনের মাথায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তি অভিনেত্রী । তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ) ।

“আপনাদের শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। সরকার সব সময় আপনাদের পাশে রয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর আমি দরিদ্র-নিম্নবিত্ত মানুষদের সহায়তার জন্য কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। আমরা ইতোমধ্যে পল্লী অঞ্চলে কর্মসৃজনের জন্য ৮০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং পবিত্র রমজান ও আসছে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬৭২ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। এর দ্বারা দেশের প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৪২ হাজার নিম্নবিত্ত পরিবার উপকৃত হবেন। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ভিজিএফ, টেস্ট রিলিফসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।”

“তবে আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের নিজের, পরিবারের সদস্যদের এবং প্রতিবেশির সুরক্ষা প্রদানের। কাজেই ভিড় এড়িয়ে চলুন। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। ঘরে ফিরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গরম পানির ভাপ নিন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে ১৮-দফা নির্দেশনা জারি করেছে। আমরা যদি সকলে করোনাভাইরাস মোকাবিলার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, অবশ্যই এই মহামারিকে আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ।”

“প্রিয় দেশবাসী,
যুগে যুগে মহামারি আসে, আসে নানা ঝড়-ঝঞ্ঝা, দুর্যোগ-দুর্বিপাক। এসব মোকাবিলা করেই মানবজাতিকে টিকে থাকতে হয়। জীবনের চলার পথ মসৃণ নয়। তবে পথ যত কঠিনই হোক, আমাদের তা জয় করে এগিয়ে যেতে হবে।

আপনাদের শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। সরকার সব সময় আপনাদের পাশে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চাঁদের হিসাব ও রোজার সংখ্যা : আলহাজ্জ্ব খাজা শাহ সূফী সৈয়্যেদ নূরে আখতার হোসাইন আহমদীনূরী মা.জি.আ.
ইসলামের প্রথম ও প্রধান ফরজ জ্ঞানার্জন করা। যে কোন ইবাদত পালন করার জন্য সেই ইবাদতের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে আগে জানতে হয়। তা না হলে ইবাদত ত্রুটিমুক্ত হয় না। ত্রুটিযুক্ত ইবাদত থেকে কাঙ্ক্ষিত রহমত, নেয়ামত ও ফজিলত লাভ করা যায় না। তাই বলা হয়েছে এক ঘণ্টার জ্ঞান চর্চা ৭০ বছর নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। বিদ্বানের কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র। এ রকম অসংখ্য মূল্যবান বাণীর মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এবং তাঁর রাসূল পাক সাঃ জ্ঞানার্জনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছেন।
মুসলমানদের অনেক ইবাদত চাঁদের হিসাবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবিব মুহাম্মদ সাঃ চাঁদের হিসাব সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেন। রাসূল সা. নতুন চাঁদের যথাযথ হিসাব রাখতেন এবং উম্মতগণকে সে বিষয়ে সবিশেষ নির্দেশনা দান করেছেন। কেননা সঠিক ভাবে ইবাদত বন্দেগী পালন এবং তা থেকে কাক্সিক্ষত রহমত-নেয়ামত লাভ করতে হলে চাঁদের হিসাব সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা এবং সঠিক ভাবে হিসাব গণনা করা একান্তভাবে জরুরী। যে দিনে যে সময়ে যে ইবাদতের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা যদি সঠিক দিন-ক্ষণ সময়ে পালিত না হয় তবে শ্রম বিফল হবে, সময় নষ্ট হবে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ফজিলত লাভের পরিবর্তে ভুল দিন-ক্ষণে ইবাদত পালন আদেশ লঙ্ঘনের সামিল বা গুনাহের কারণও হয়ে থাকে। তাই এ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করা অতি আবশ্যক।
চাঁদের হিসাবে গরমিলের কারণে নির্দিষ্ট সময়ের কাঙ্ক্ষিত রহমত-ফজিলত হতে বঞ্চিত হতে হয়, কেননা শবে কদর, শবে বরাত, শবে মিরাজ ইত্যাদি এক রাতেরই ব্যাপার। হিসাব গণনা সঠিক না হলে তা পাওয়া যাবে না। একই ভাবে হিসাবের ক্রটির কারণে রমজানের ফরজ রোজা বিলম্বে শুরু এবং ঈদের দিনে রোজা রাখার মাধ্যমে হারাম রোজাও পালিত হয়।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনার মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মেধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান, সুতরাং তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। (সূরা তওবা, আয়াত-৩৬) আল কুরআনে অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, তিনিই সে মহান সত্তা যিনি বানিয়েছেন সূর্যকে উজ্জ্বল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে এবং অতঃপর নির্ধারণ করেছেন এর জন্য মনজিলসমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। আল্লাহ তায়ালা এই সমস্ত কিছু এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু যথার্থতার সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণ সমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে। (সূরা ইউনুছ, আয়াত-৫)
এভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন চাঁদের সঠিক হিসাবের গুরুত্ব অনুধাবনে জ্ঞানী ব্যক্তিদের মর্যাদা সম্পর্কেও বর্ণনা করেছেন। চাঁদের হিসাবের বিষয়ে অন্য একটি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, (হে রাসূল সাঃ) ! মানুষ আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলে দিন তা মানুষের জন্য সময় নির্ধারক এবং হজ্বের সময় নির্ধারণকারী। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৯)
আল কুরআনের এ সকল নির্দেশ ও নিদর্শন সমগ্র বিশ্বের মানব জাতির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। দেশ বা অঞ্চল বিশেষে তা হেরফের করার সুযোগ নেই। তাই এলাকা ভিত্তিক চাঁদের ভিন্ন ভিন্ন হিসাব গ্রহণীয় নয়। ইসলামের বিধি-বিধান যথার্থরূপে পালনের লক্ষ্যে মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের সংগঠন ওআইসি’র অঙ্গ সংস্থা ‘ইসলামী ফিকাহ একাডেমী’ ১৯৮৬ সালে আম্মানে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে ৬ নং প্রস্তাবে ঘোষণা করে, “কোন দেশে নতুন চাঁদ দেখা গেলে অন্য দেশের মুসলমানদেরও তাই মেনে চলা দরকার। চন্দ্র উদয়ের স্থানের পার্থক্য বিবেচনার প্রয়োজন নেই। কেননা চাঁদ দেখা মাত্র রোজা রাখার (অর্থাৎ রমজান শুরু করার) ও শাওয়ালের চাঁদ দেখে ঈদ করার আদেশ সার্বজনীন ও সবার জন্যে প্রযোজ্য।”
বিশ্বের সকল মুসলিম দেশের ইসলামী আইন বিশারদগণ ওআইসি’র ফিকাহ একাডেমির সদস্য। তাদের উক্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশের মধ্যে ৪৭টি দেশে একই দিনে রোজা, ঈদ ও অন্যান্য ইসলামী পর্ব পালন করছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। আর জ্ঞান-বিজ্ঞানে অগ্রসর দেশ সমূহের অন্যতম মালয়েশিয়া। এই দেশ দুইটির অবস্থান বিশ্ব মানচিত্রের পূর্ব দিকে। বাংলাদেশের সাথে সৌদি আরবের সময় পার্থক্য ৩ ঘণ্টার। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়ার সাথে সৌদি আরবের সময় পার্থক্য ৫-৬ ঘণ্টা। তা সত্ত্বেও সে সব দেশ ওআইসি’র ফেকাহ একাডেমির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্বে প্রথম চন্দ্র দর্শনের উপর ভিত্তি করে চাঁদের উপর নির্ভরশীল ইসলামী পর্ব সমূহ উদযাপন করে আসছে। একই সঙ্গে তাদের পার্শ্ববর্তী ব্রুনাই, কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও একই দিনে ইসলামী অনুষ্ঠান সমূহ পালন করে।
ওআইসি’র উক্ত সিদ্ধান্ত কিছু মুসলিম রাষ্ট্র অনুসরণ না করার ফলে দেখা যায় একই ইবাদত বা অনুষ্ঠান বিশ্বব্যাপী ৩ দিনেও পালিত হয়ে থাকে। মুসলিম বিশ্বের এ বিশৃঙ্খল অবস্থা সম্পর্কে ২৮ অক্টোবর ২০০৬ এক প্রেস রিলিজে ওআইসি’র মহাসচিব একমেলেদ্দীন ইহসানোগলু বলেন,’ “এ বছর (২০০৬) ঈদুল ফিতর উদযাপনে সময়ের পার্থক্য ৩ দিন পৌঁছেছে। আধুনিক বিজ্ঞান বিশেষতঃ জ্যোতির্বিজ্ঞানের অভাবনীয় অগ্রগতির যুগে এই অবস্থা দুঃখজনক। তিনি আরো বলেন, ইসলামী উৎসবগুলোর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এসব উৎসব বিশ্বের সব মুসলিমের হৃদয়ে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেয়। এই ঐক্য এসব উৎসবের নির্যাস হিসেবে প্রকাশ পায়। কিন্তু এসব উৎসব বর্তমানে মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যের বদলে অনৈক্য ও বিভেদের উপলক্ষ হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। এতে মুসলিমদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি প্রকাশ পাচ্ছে না। এটি একটি বড় ধরনের ভুল। কারণ এসব ধর্মীয় উৎসব ধর্মের বস্তুনিষ্ঠতা থেকে দূরে সরে যেয়ে একঘেয়েমি ও কূপমন্ডুকতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে ওআইসি ছাড়াও বহু মুসলিম ব্যক্তি, সংস্থা ও রাষ্ট্র উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, চাঁদ কেন্দ্রিক ইবাদত ভিন্ন ভিন্ন দিতে পালন করা ইসলামের মূল আদেশের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয় এবং তা আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্যও নয়। কেননা রমজান মাস নির্দিষ্ট সময়ে রহমতের ভান্ডারসহ আগমন করে। আল্লাহর রহমতের আগমন বার্তা সাধারণ মানুষ অনুধাবন করতে না পারলেও মহান আল্লাহর অলিগণ রুহানী শক্তিবলে তা ঠিকই উপলব্ধি করতে পারেন। সেজন্য তাঁদের আকাশের দিকে তাকিয়ে চাঁদ দেখার প্রয়োজন হয় না। হযরত বড়পীর মহিউদ্দিন আবদুল কাদির জিলানী রহ. এর জীবনে এর প্রকৃষ্ট নিদর্শন পাওয়া যায়। তিনি রমজানের ১ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন এবং জন্মাবধি রমজান মাসে রোজা রাখতেন। তাঁর জীবনের প্রথম দিনের ঘটনা থেকে চাঁদের হিসাবের রহস্য জানা যাবে।
শাবান মাসের ২৯ তারিখে নতুন চাঁদ দেখার আশায় হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষা করছে। পারস্যের জিলান নগরীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তাদের পক্ষে নতুন চাঁদ দেখা সম্ভব হয়নি। পরের দিন রোজা রাখবে কি-না সকলে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন। হযরত আবদুল কাদির রহ. এর পিতা-মাতা সকলের কাছে পরম শ্রদ্ধেয় ছিলেন। ধর্মীয় কোন মাসয়ালা-মাসায়েল জানতে হলে সকলে ছুটে যেত তাদের কাছে। চাঁদ না দেখতে পেয়ে পরের দিন প্রত্যুষে সকলে ছুটলো আবদুল কাদির রহ. এর বাড়িতে। ঘটনাক্রমে তাঁর পিতা সৈয়্যেদ আবু সালেহ মুসা জঙ্গীদুস্ত রহ. সেই সকালে বাড়িতে ছিলেন না। তখন মাতা উম্মুল খায়ের ফাতেমা রহ. সকলকে আশ্বস্ত করলেন এই বলে যে, “রেওয়ায়েতে আছে শাবানের ২৯ তারিখে চাঁদ না দেখা গেলে ৩০ তারিখ গণনা করতে হবে। তারপর রমজান শুরু করতে হবে। তবে বিস্ময়ের ব্যাপার আমার শিশুপুত্র আবদুল কাদির সুবহে সাদিকের পর থেকে কিছুই পান করছে না। আমি তাঁর মুখের মধ্যে দুধ বা মধু দিলেও তা সে বের করে দিচ্ছে। আমার মনে হয় আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে সে রোজা পালন করছে।”
মাতার মুখে এ কথা শুনে সকলে বিস্ময়ে অভিভূত হলেন। ফলে তারা সিদ্ধান্ত নিলেন সেদিনে রোজা রাখবেন। পরের দিন আকাশ পরিষ্কার ছিল।
সকলে দেখলেন, যে চাঁদ আকাশে উঠেছে তা দ্বিতীয় দিনের চাঁদ। এখানে শিক্ষণীয়, হাজার হাজার মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে যে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেন না, শিশু আবদুল কাদির জিলানী মাতৃক্রোড়ে থেকেই সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারলেন। আল্লাহর অলিদের পক্ষে এটা সম্ভব। আল্লাহর ঘোষিত নির্দিষ্ট সময়ের সাথে যে নির্ধারিত রহমত ফজিলত পৃথিবীর বুকে অবতীর্ণ হয় তা তাঁরা সাথে সাথে উপলব্ধি করতে পারেন এবং সে মোতাবেক ইবাদত-বন্দেগী পালন করে থাকেন। এ কারণে আধ্যাত্মিক দরবার সমূহে বিশ্বের প্রথম চন্দ্র উদয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ইবাদত-বন্দেগী পালন করে থাকে।
বাংলাদেশের আকাশে সঠিক সময়ে নতুন চাঁদ উদয় না হওয়ায় আজ হতে প্রায় একশত চল্লিশ বছর পূর্বে শামসুল উলামা আল্লামা হযরত শাহ সূফী সৈয়্যেদ আহমদ আলী ওরফে হযরত জানশরীফ শাহ সুরেশ্বরী রহ. চান্দ্র মাসের সঠিক হিসাব গণনার ভিত্তিতে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্যে নির্দেশনা দান করেছেন। তিনি স্বরচিত নূরেহক গঞ্জেনূর গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। সে নির্দেশনা অনুসারে দরবার শরীফের ভক্ত-অনুসারীগণ এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষ বিশ্বের প্রথম চাঁদ দেখার সংবাদের ভিত্তিতে রোজা, ঈদ, শবে কদর, শবে বরাত ও অন্যান্য ইবাদত পালন করেন।
চাঁদের হিসাবের বিষয়ে রাসূল সা. বলেছেন, “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ, আর চাঁদ দেখে রোজা সম্পন্ন কর। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তা হলে শাবান মাসের দিনের সংখ্যা ত্রিশ পূর্ণ কর।” (বুখারী ও মুসলিম শরীফ) সহিহ হাদিসের বর্ণনায় জানা যায় কোন এক ব্যক্তি নতুন চাঁদ দেখার সংবাদ রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জানালে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস কর? সে জবাব দিল, হাঁ। অতঃপর রাসূল সা. তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি মুহাম্মদ সা. কে আল্লাহর রাসূল হিসাবে মান? সে জবাব দিল, হাঁ। তখন রাসূল সা. বিলালকে ডেকে বললেন, হে বিলাল সবাইকে জানিয়ে দাও কাল রোজা শুরু। এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় সকলকে নিজের চোখে চাঁদ দেখার প্রয়োজন নেই, বরং কোন মুসলমান চাঁদ দেখার সংবাদ জানালে তা অন্য মুসলমানের জন্য মানা আবশ্যক। আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কার গ্রহণযোগ্য উপায়ে মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের একপ্রান্তের সংবাদ অন্যপ্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে যা কুরআন-হাদিসের নির্দেশ পালনে সহায়ক। তা সত্ত্বেও অন্য সব ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের আবিষ্কার স্বীকার করে নেয়া হলেও চাঁদের হিসাবের ক্ষেত্রে কেন এদেশ পিছিয়ে তা বোধগম্য নয়। বিশ্বব্যাপী সর্বত্র একই দিনে জুমার নামাজ আদায় হলেও ঈদের নামাজ আদায় হচ্ছে না। অজ্ঞতাই এর মূখ্য কারণ।
বাংলাদেশের আকাশে নতুন চাঁদ যথাসময়ে দৃষ্টিগোচর হয় না। তাই রহমতে পূর্ণ রমজানের ১টি বা ২টি রোজা বাদ হয়ে যায়। অন্যদিকে আল্লাহর হিসাবের রোজা শেষ হয়ে গেলেও এদেশের মানুষ রোজা পালন করতে থাকে। অর্থাৎ ঈদের দিনেও রোজা রাখে, যা হারাম। তাই নতুন চাঁদের হিসাবের ক্ষেত্রে কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে ফরজ রোজার সংখ্যা সঠিকভাবে পালনের প্রতি সকলের যত্মবান হওয়া আবশ্যক।

চাঁদের হিসাব ও রোজার সংখ্যা : আলহাজ্জ্ব খাজা শাহ সূফী সৈয়্যেদ নূরে আখতার হোসাইন আহমদীনূরী মা.জি.আ.

মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ছুটিতে আসা এবং নতুন ভিসা প্রাপ্ত প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে সময় মত গমনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ফ্লাইট চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য আটাব এর সংবাদ সম্মেলন, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি ভবন (সাগর-রুনি হল), সেগুনবাগিচা, ঢাকা । ১৩ এপ্রিল ২০২১ইং ।

 

আটাব- এর পক্ষ থেকে সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ।

আপনারা অবগত আছেন যে, আটাব দেশের প্রায় ৩৫০০ সরকার নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির একটি অলাভজনক সংগঠন। আটাব ৪২ বছর ধরে তার সদস্যদের কল্যানে নিবেদিত। বিদেশগামী যাত্রীদের এয়ার টিকেট ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা সহ দেশী-বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে আটাব নিবিড় ভাবে কাজ করছে এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগী সংস্থা হিসেবে গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাজ হচ্ছে সকল Airlines-এর মাধ্যমে বিদেশ ভ্রমনেচ্ছুক যাত্রী এবং প্রবাসী কর্মীদের Airlines সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ, এয়ার টিকেট ইস্যু করা, ভ্রমন ভিসা আবেদন সহ সংশ্লিষ্ট কাজে সহায়তা করা। তাছাড়া হজ্জ্ব লাইসেন্স প্রাপ্ত ট্রাভেল এজেন্সিগুলো হজ্জ্ব ও ওমরাহ সম্পাদনে যাবতীয় সহযোগিতা করে থাকে। Aviation সংশ্লিষ্ট সমস্ত কাজেই ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সংশ্লিষ্টতা থাকে বিধায় এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে কোন সমস্যার সৃষ্টি হলে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো সে সমস্যা সমাধানে জনকল্যানে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করে। কারণ ট্রাভেল এজেন্সি ও এয়ারলাইন্সগুলো এক সাথে কাজ করে থাকে।

জাতির বৃহত্তর স্বার্থে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী ও নতুন ভিসা প্রাপ্তদের যাতায়াত সচল রাখার নিমিত্ত লকডাউনের মাঝে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ চলাচল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আপনাদের মাধ্যেমে সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

দেশব্যপী করোনা ভাইরাসের বর্তমান অস্বাভাবিক প্রাদুর্ভাবের করনে আগামী ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল, ২০২১ তারিখ পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে। করোনামহামারী নিয়ন্ত্রনে সরকারের পদক্ষেপের সাথে সহযোগিতা করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আামাদের সকলেরই দায়িত্ব। লডাউনের সময়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণ পথে সকল ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। মূল্যবান বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী অনেক প্রবাসি ছুটি নিয়ে বা জরুরী প্রয়োজনে বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন এবং তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদ উর্ত্তীণ হতে চলেছে । তারা এয়ারলাইন্সের টিকেট সংগ্রহ করে কর্মস্থলে গমণের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন । তাছাড়াও অনেক নতুন কর্মী ভিসা প্রাপ্ত হয়ে কর্মস্থলে গমণের অপেক্ষায় রয়েছেন । নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করতে পারলে নিয়োগ কর্তা তাদের অনেকেরই ভিসা বাতিল করবেন ।

প্রবাসীদের ছুটি শেষে নিজ কাজে সুষ্ঠ ভাবে ফিরে যাওয়া বা নতুন ভিসা নিয়ে কর্মে যোগদান করতে তাদের যাতায়াত চলমান রাখা অতীব প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি । অন্যথায় তাদের চাকুরী হারানোর শঙ্কা রয়েছে । একজন প্রবাসীর আয়ের উপর তার পুরো পরিবার নির্ভরশীল । সঠিক সময়ে নিজ কর্মস্থলে গমন করতে না পারার কারনে তাদের কর্মচ্যুতি হলে তাদের পরিবার পথে বসার উপক্রম হবে ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন সাধন করেছেন এবং করে চলেছেন । প্রবাসী বাংলাদেশী তথা প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে বর্তমান সরকার বহুমুখী কল্যানমূলক কর্মসূচী নিয়েছেন । তাছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও বেশি বেশি কর্মী প্রেরণের জন্য অনেক উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী এবং নতুন ভিসা প্রাপ্ত কর্মীদের সময় মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টিও বর্তমান সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবেন বলে আমরা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি । লকডাউনের সময় যাদের ফ্লাইট নির্ধারিত ছিল বা যাদের ভিসা মেয়াদোত্তীর্নের পথে তারা সময়মত কর্মস্থলে পৌঁছাতে না পারলে ব্যক্তি, পরিবার এবং রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্থ হবে ।

এছাড়া প্রবাসী কর্মীগণ যে সকল দেশে গমন করবেন বিশেষত সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ অনেক দেশ অদ্যাবধি বাংলাদেশী যাত্রী প্রবেশে কোন প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ করেনি । তাই প্রবাসী কর্মী যাত্রীদের নিজ গন্তব্যে গমনের জন্য লকডাউনের মাঝে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ সচল রাখতে আপনাদের মাধ্যমে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ ও বিশেষ হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।

ধন্যবাদান্তে মনছুর আহামেদ কালাম, সভাপতি আটাব ।

মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ছুটিতে আসা এবং নতুন ভিসা প্রাপ্ত প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে সময় মত গমনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ফ্লাইট চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য আটাব এর সংবাদ সম্মেলন।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল চালু রাখা হোক — আটাব এর সাবেক মহাসচিব আব্দুস সালাম আরেফ ।
২০২০ সালে করোনা যখন ইতালি, ফ্রান্সসহ ইউরোপে চরম অবস্থা বিরাজ করছিলো তখন বাংলাদেশে ইউরোপ থেকে ফ্লাইট যথারীতি চালু রেখেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষ ( বেবিচক) । আবার নতুন করোনা যখন ইংল্যান্ডে দেখা দিলো তখনও বিমানের লন্ডন ফ্লাইট ও অন্যান্য ফ্লাইটে লন্ডনের যাত্রী দেশে আশা যাওয়া করেছে বেবিচকের অনুমতি নিয়েই।
যার ফলে দেশে করোনার বিস্তার ঘটেছে ব্যাপকভাবে। করোনা নিয়ন্ত্রনে প্রয়োজনীয় সময়ে বেবিচক কি যথাযথ ভুমিকা রাখতে পেরেছে?
লকডাউনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ খাত হচ্ছে এভিয়েশন ও টুরিজম খাত। বর্তমানে ধুকে ধুকে চলা এইখাত বেচে থাকার কঠিন লড়াইয়ে অবতীর্ণ । এরই মধ্যে ১৪ই এপ্রিল থেকে আবার ১ সপ্তাহের জন্য ফ্লাইট বন্ধের ঘোষনা দেয়া হয়েছে।  এই নিষেধাজ্ঞা ২/৩ সপ্তাহ বা তার বেশী সময় ও চলতে পারে।
বর্তমান সময়ে সকল যাত্রীর যাওয়া আশা বা ভ্রমনের ক্ষেত্রে করোনা টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধের মাধ্যমে বেবিচক কি প্রত্যাশা করছে সেটা বোধগম্য নয়। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ দেশের সাথেই ফ্লাইট বন্ধ আছে। শুধুমাত্র মধ্য প্রাচ্যের সৌদি আরব, দুবাইসহ কয়েকটি রাষ্ট্রে শ্রমিকদের যাতায়াত চলমান আছে। বাংলাদেশের শ্রমিক গ্রহনে ঐ সকল দেশের কোন নিষেধাজ্ঞা নাই। এ সকল দেশে শ্রমিক যাত্রীরা যদি যেতে না পারে তাহলে অনেক শ্রমিকের ভিসা বাতিল হয়ে যাবে, অনেক পরিবার পথে বসবে।
ভিসা সংগ্রহকারী ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি ও টিকেট প্রদানকারী ট্রাভেল এজেন্ট, এয়ারলাইন্স, সর্বপরি দেশ, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। লকডাউনে বিদেশগামী যাত্রীরা কি খুব বেশী সমস্যা করবে নাকি বিদেশগামী এই সব শ্রমিক ভাইয়েরা যেতে না পারলে সমস্যা বা ক্ষতি বেশী হবে ?  আমি মনে করি এই বিষয়টি লকডাউনে আওতার বাহিরে রাখা দরকার। তাই বেবিচক, সিভিল এভিয়েশন মিনিস্ট্রি, সর্বপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনঃ বিবেচনার আহবান জানাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল চালু রাখা হোক — আটাব এর সাবেক মহাসচিব আব্দুস সালাম আরেফ ।

করোনা কালীন লকডাউনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট গুলো চালু রেখে বিদেশগামী ও বিদেশ ফেরত যাত্রীদের জন্য এয়ারপোর্টে যাতায়াতের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাপনা জরুরী : আটাব ও হাব এর সাবেক মহাসচিব আলহাজ্ব জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দিপু ।

পত্রিকা ও টিভি রিপোর্ট অনুসারে, লকডাউনে বিমানবন্দরে যাতায়াতে দিক বিবেচনায় নিয়ে ১৪ এপ্রিল হতে কঠোর লকডাউনে আওতায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সমুহ বাতিল করার পরিকল্পনা করেছেন সরকার । উক্ত পরিকল্পনা বাস্থবায়ন কতটুকু সমীচিন হবে ,তা একটু বিবেচনা করা প্রয়োজন ! পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে বাংলাদেশ হতে বিদেশগামী ও দেশমূখী যাত্রীদের জন্য এক বিরাট সংকট সৃস্টি হবে ।

প্রথমত : মধ্যপ্রাচ্য, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে নতুন চাকুরীপ্রাপ্ত ও ছুটিতে আসা চাকুরীরত অনেকে যথাসময়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারবেন না, ফলে নতুনদের যাত্রা অনিশ্চিত ও পুরনোদের চাকুরী হারাবার সমুহ সম্ভাবনা সৃস্টি হবে । এমনকি অনেকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যেতে পারে।

লকডাউনে আপাতত ৭ দিনের ফ্লাইট বাতিল হলেও লকডাউন পরবর্তীতে ফ্লাইট চালু হওয়ার পর যাত্রীদের যে চাপ সৃস্টি হবে সেক্ষেত্রে যাত্রীর ভ্রমনের দিন ও ক্ষণ নির্ধারনে এক মারাত্মক অনিশ্চিত পরিস্থিতির উদ্ভব হবে। পাশাপাশি এয়ারলাইন্স ও ট্র্যাভেল এজেন্টরাও বিশাল চাপের মূখোমূখী হবেন ।

যারা রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসাবে খ্যাত ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখে চলেছেন, লকডাউনে আন্তর্জাতিক ফাইট বাতিল করা কখনো তাদের ব্যক্তিজীবন ও দেশের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না ।
এই সব যাত্রীর বাইরে আরো বিরাট অংশের পশ্চিমাবিশ্বগামী যাত্রী আছেন যেমন ছাত্র, গ্রিনকার্ড বা ওয়ার্ক পারমিটধারী ইত্যাদি, যাদের ক্ষেত্রে যথাসময়ে তাদের গন্তব্যে পৌছার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে ।

উল্লেখ্য, ১৪ এপ্রিল শুরু হওয়া লকডাউন শুধু বাংলাদেশের আভ্যন্তরিন সিদ্ধান্ত, যার সাথে অন্যান্য দেশের কোন সম্পর্ক নাই। আমাদের দেশের মানুষদের কর্মক্ষেত্রের সেই সকল দেশ আমাদের দেশের সমস্যাকে যে বিশেষ গুরুত্ব দিবে তার কি কোন ন্যূনতম নিশ্চয়তা আছে !

বর্তমান পরিস্থিতিতে লকডাউন প্রয়োজন । তারপরও আমাদের প্রবাসীদের অবদান, তাঁদের ব্যক্তি ও দেশের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ বাতিল না করে লকডাউনে বিদেশগামী ও বিদেশফেরত যাত্রীদেরকে এয়ারপোর্টে গমনাগমনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাপনা সরকার ইচ্ছা করলেই করতে পারেন, যা অতি প্রয়োজনীয় ।তাই সরকার ও সিভিল এভিয়েশনকে বিষয়টি বিবেচনা করে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনুরোধ রইল।

করোনা কালীন লকডাউনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট গুলো চালু রেখে বিদেশগামী ও বিদেশ ফেরত যাত্রীদের জন্য এয়ারপোর্টে যাতায়াতের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাপনা জরুরী

https://www.facebook.com/bm24tvofficialpage