গত ৩ এপ্রিল গণভবনে অনুষ্ঠিত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের চুম্বক অংশটি দেশের সব পত্রিকায় খুবই গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত দূরদর্শী ও সময়োপযোগী এ বক্তব্যে বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য জনশক্তিকে দক্ষতাসম্পন্ন করে গড়ে তোলার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এজন্য কূটনীতিকে এখন রাজনৈতিক বলয় থেকে বিস্তৃত করে অর্থনৈতিক স্তরে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

দেশের জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরাও বহুদিন আগে থেকেই নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে সেখানে জনশক্তি রপ্তানি করে বেসরকারি পর্যায়ে তাদের ভূমিকা রেখে চলেছেন। এসব নতুন দেশের অনেকগুলোই ইউরোপ মহাদেশের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী দেশ।

একজন পর্যটন ব্যবসায়ী হয়েও একই সঙ্গে বাংলাদেশের একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের বৈদেশিক প্রতিনিধি হিসেবে আমি নিজেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে পর্যটন ব্যবসার পাশাপাশি বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির জন্য ইউরোপের দেশগুলোতে নতুন বাজারের সন্ধানে গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে একুশ দিনের এক দীর্ঘ ব্যবসায়িক সফরে রোমানিয়া, সার্বিয়া, অস্ট্রিয়া, ইতালি ও পোল্যান্ড ভ্রমণ করেছি এবং এসব দেশের বিভিন্ন চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত অনেকগুলো বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছি। এসব বৈঠকে চাকরিদাতা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনায় যা উঠে এসেছে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের একটি হচ্ছে সেসব দেশে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা, যা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবৃত হয়েছে।

বিভিন্ন বাস্তবিক কারণেই ইউরোপের দেশগুলোতে ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে দক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা। বিভিন্ন ধরনের হালকা ও ভারি নির্মাণশিল্পের শ্রমিক, বিভিন্ন রকমের কারখানা ও ওয়্যারহাউসের শ্রমিক, রেস্টুরেন্টের শেফ ও ওয়েটার, ভারি যানবাহনের ড্রাইভারসহ বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কর্মীদের মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে দক্ষ ওয়েল্ডার ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা। এদের চাহিদা যেমন বেশি, তেমনি বেতনও তুলনামূলকভাবে অনেক। পক্ষান্তরে অদক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা যেমন কম, তাদের বেতনও অনেক কম।

তাই আমাদের বিদেশ গমনেচ্ছু শ্রমিকদের বর্তমান চাকরি বাজারের উপযুক্ত করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ করে গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। আমরা যদি বিভিন্ন পেশায় প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের শ্রমিকদের বিদেশে প্রেরণ করতে চাই, তাহলে ইউরোপের দেশগুলো হতে পারে আমাদের জন্য চমৎকার এক শ্রমবাজার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর তুলনায় ইউরোপের এসব দেশে বেতনের পরিমাণও কয়েকগুণ বেশি এবং সুযোগ-সুবিধাও অনেক। তাছাড়া বিশ্বের উন্নত দেশ হওয়ার কারণে এসব দেশের জীবনযাপনের মানও অনেক উন্নত এবং বেশিরভাগ দেশেই পাঁচ বছর নিয়মমাফিক অবস্থান করলে শর্তসাপেক্ষে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়া যায়।

একটি বাস্তবিক ব্যাপার হলো যে, আমাদের দেশের শ্রমিকদের মধ্যে যাদের ওইসব দেশে স্থায়ী বসবাসের ইচ্ছে রয়েছে, স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন তাদের জন্য বয়ে আনতে পারে তাদের নিজেদের জীবনমান পরিবর্তনের এক সুবর্ণ সুযোগ। আর এসব দেশে অবস্থান করে চাকরির মাধ্যমে অর্থোপার্জন করে তা দেশে পাঠানোর মাধ্যমে তারা তাদের পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে যেমন ভূমিকা রাখতে পারে; তেমনি তাদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা আমাদের অর্থনীতিতে আনতে পারে এক সোনালি বিপ্লব, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামগ্রিক উন্নয়নে অত্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
তবে ইউরোপে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিপুল এই সম্ভাবনার হাত ধরে একই সঙ্গে চলে এসেছে একটি মারাত্মক বাস্তবিক আশঙ্কাও; যা এই সম্ভাবনাকে হয়তো বা আঁতুড়ঘরেই হত্যা করতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ইউরোপের দেশগুলোতে শ্রমিকদের অভিবাসনের পছন্দের তালিকায় বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ রোমানিয়া; যে দেশটি প্রায় তিন দশক আগে কমিউনিজম শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে এবং বর্তমানে শেঙ্গেন দেশগুলোর জোটে অন্তর্ভুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এই দেশটিতে অভিবাসনের প্রত্যাশায় এত বেশি ভিসার আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে যে, রোমানিয়া সরকার এসব আবেদন নিষ্পত্তি করে ভিসা প্রদানের জন্য গত বছর তিন মাসের মেয়াদে একটি কনস্যুলার টিম বাংলাদেশে প্রেরণ করেছিলেন এবং বর্তমান বছরের মার্চ মাস থেকে আবারো তারা ঢাকায় এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এটি আমাদের জনশক্তি রপ্তানির জন্য একটি দারুণ ইতিবাচক ব্যাপার।

কিন্তু আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা যে আশঙ্কার উদ্রেক করেছে তা অত্যন্ত বাস্তব অভিজ্ঞতাভিত্তিক এবং তা সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সকলের ভেবে দেখার দাবি রাখে বৈকি!
রোমানিয়াসহ উল্লেখিত দেশগুলোর প্রায় সবটিতেই অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একজন শ্রমিককে তাদের দেশে এনে কাজে যোগদান করাতে একজন চাকরিদাতাকে কমবেশি প্রায় ৬ মাস সময় অপেক্ষা করতে হয়। এর জন্য তাদের অর্থকড়িও খরচ করতে হয়। কিন্তু এত অপেক্ষার পর চাকরিদাতারা যেসব শ্রমিককে তাদের দেশে নিয়ে আসেন, তারা কিছুদিন চাকরি করার পর; এমনকি কখনো কখনো সেসব দেশে পদার্পণের পরপরই আরো উন্নত জীবন পাওয়ার আকাক্সক্ষায় তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে যান ফ্রান্স, ইতালি কিংবা ইউরোপের অন্যান্য উন্নত দেশে সেখানে অবস্থান করা তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে; যা একজন চাকরিদাতার জন্য এক চরম ক্ষতিকর ব্যাপার। এই ক্ষতি শুধু যে চাকরিদাতার জন্য ক্ষতি তা নয়; এই ক্ষতি পালিয়ে যাওয়া এসব বাংলাদেশি শ্রমিকেরও।

কারণ অবৈধভাবে ভিন্ন দেশে অনুপ্রবেশের কারণে তারা সেসব দেশেও হয়ে পড়েন অবৈধ অভিবাসী এবং তাদের ভবিষ্যৎকে করে তোলেন ঝুঁকিপূর্ণ। যখন তারা তাদের ভুল বুঝতে পারেন, তখন আর সেখানে ফিরে যাওয়ার কোনো উপায় থাকে না। তারা সেসব দেশে যাপন করেন অবর্ণনীয় এক দুঃস্বপ্ন ও দুর্দশাগ্রস্ত জীবন, যা তাদের পরিবারের কাছে তারা লজ্জায় প্রকাশ করেন না; আর আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ তাই তা জানতেও পারেন না।

অপরদিকে এসব পালিয়ে যাওয়া শ্রমিকের কারণে ওইসব দেশের চাকরিদাতাও বাংলাদেশের শ্রমিকদের চাকরি প্রদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এর ফলে যেসব শ্রমিক ওইসব দেশে অভিবাসনের প্রত্যাশায় দিন গুনছেন, তাদের জন্য সেই সুযোগ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে; বিনা দোষে কপাল পুড়ছে তাদের। অথচ ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার শ্রমিকরা কিন্তু তাদের চাকরির শর্ত ভঙ্গ করছেন না এবং সুনামের সঙ্গেই তারা ওইসব দেশে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের শ্রমিকরা যদি এমন অপরিণামদর্শী না হতেন; তাদের চাকরিদাতাকে বিপদে না ফেলে সেখানেই চাকরি করতেন তবে সেসব দেশে আমরা লাখ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারতাম।

আরেকটি ব্যাপারে সদাশয় সরকারের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করে আজকের মতো ইতি টানতে চাই। গত ৬ মার্চ তুষার ঢাকা এক হিমশীতল বিকালে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশোতে পোলিশ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের একজন প্রতিনিধিসহ আমি বাংলাদেশ দূতাবাসের মান্যবর রাষ্ট্রদূতের উষ্ণ আতিথেয়তায় দূতাবাসের অফিসে এক ঘণ্টা স্থায়ী এক বৈঠকে অংশগ্রহণ করি। জনশক্তি রপ্তানির ব্যাপারে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মান্যবর রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের দুজনের ব্যাপক আলোচনা হয় এবং তিনি বাংলাদেশের শ্রমিকদের চাকরির সুযোগ খোঁজার জন্য আমাকে ধন্যবাদ প্রদান করেন তবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের একটি অংশ ভিন্ন দেশে চলে যাওয়ার ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দক্ষ শ্রমিকদের চাকরির চাহিদার ব্যাপারে তিনিও একমত প্রকাশ করেন এবং আমি তাকে জানাই যে, বৈঠকে উপস্থিত পোলিশ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আমার কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ওয়েল্ডার এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের (সফটওয়ার ও হার্ডওয়ার) কর্মসংস্থানের জন্য আমাকে একটি চাহিদাপত্র প্রদান করেছেন এবং আমি এই কোম্পানির সব কাগজপত্র এবং উক্ত ওয়েল্ডার ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মস্থল, কর্মপরিবেশ এবং থাকার জায়গা ইত্যাদি দূতাবাসের মাধ্যমে পরীক্ষা, পরিদর্শন ও সত্যায়িত করাতে চাইলে তিনি তার জনবলের অপ্রতুলতার কথা প্রকাশ করলেও তিনি ব্যাপারটি দেখবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন।

এখানে বলা উচিত যে, পোল্যান্ডে প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশি নাগরিকের বসবাস এবং আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, এখানে বাংলাদেশিদের মালিকানায় বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টের সংখ্যা বর্তমানে এক হাজারেরও বেশি! আমার মনে হয়েছে সুন্দর এই দেশটি বাংলাদেশিদের জন্য একটি উদ্যোক্তার দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে পোল্যান্ড এবং জার্মানি হতে পারে আমাদের একটি প্রধান শ্রমবাজার কেননা জার্মানিও ইতোমধ্যে তাদের প্রায় ৬০ হাজার দক্ষ জনশক্তির চাহিদার ঘোষণা দিয়েছে।

সদাশয় সরকার পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসে জনবল বৃদ্ধি ও লেবার কাউন্সিলর নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারটি বিবেচনায় নিলে সেখানে আমাদের জনশক্তি রপ্তানির কাজটি সহজ হতে পারে। আর বাংলাদেশে যেহেতু পোল্যান্ডের কোনো দূতাবাস নেই, তাই আমাদের নাগরিকদের ভিসার আবেদনপত্র জমা দিতে যেতে হয় ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে এবং সেখানে প্রায় এক মাস অবস্থান করতে হয়, যা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মতো পোল্যান্ডের ভিসা আবেদনপত্রও যদি ‘ভিএফএসে’র (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার) মাধ্যমে ঢাকায় জমা নেয়ার ব্যবস্থা করা যেত, তাহলে আমাদের নাগরিকদের ভিসা আবেদনের খরচ কমে যেত অনেক এবং তাদের মূল্যবান সময় বেঁচে যেত। আশা করি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অতীব গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি পোলিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানি সহজীকরণে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করবেন।

ড. মো. মামুন আশরাফী : লেখক : কবি, রাষ্ট্রচিন্তক ও পর্যটন বিশেষজ্ঞ।

বাংলাদেশের নতুন শ্রমবাজার : ইউরোপ

বর্ণাঢ্য আয়োজনে দেশের প্রথম ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড-২০২৩’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ)এর উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো বছরব্যাপী দেশের ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড-২০২৩’। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার সকাল ১০.০০ ঘটিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ-এর আবদুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্দো-ইউরোপিয়ান চেম্বার অব স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ-এর প্রেসিডেন্ট ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা রিসডা বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুজ্জামান মুন্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সন্তাষ কুমার দেব, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ-এর চেয়ারম্যান লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জহির উদ্দিন আরিফ এবং এনপিআই ইউনিভার্সিটি অব মানিকগঞ্জ এর পরিচালক ড. মো. ফারুক হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. সোয়েব-উর-রহমান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ)-এর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাগর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের পরিচালক (অপারেশন) কিশোর রায়হান। বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড-২০২৩’-এর এ্যাম্বাসেডরবৃন্দ, বিটিইএ-এর পরিচালক ও উপদেষ্টাবৃন্দ এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড ২০২৩’ এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিটিইএ-এর পরিচালক (অপারেশন) কিশোর রায়হান। উল্লেখ্য, ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড ২০২২ প্রশ্ন ব্যাংক’ নামে একটি তথ্যবহুল বই প্রকাশ করতে যাচ্ছে বিটিইএ। বইটি পড়ার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ তরুণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও পর্যটন সম্পর্কে নতুন নতুন জ্ঞান লাভ করতে পারবে। এই বইয়ের মাধ্যমে তারা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে দেশের দর্শনীয় স্থানগুলো তুলে ধরতে পারবে।

প্রশ্ন ব্যাংক বইটিতে বঙ্গবন্ধুর উপর ১০০ প্রশ্ন, দেশীয় পর্যটন ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে ৩০০ প্রশ্ন এবং আন্তর্জাতিক ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে ১০০ প্রশ্ন স্থান পেয়েছে। এই বইটি পড়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা পর্যটন শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং ২৩ সালের বছরব্যাপী কর্মকাণ্ডের কারণে ২৪ সালে নতুন করে ডোমেস্টিক পর্যটনে ১ কোটির বেশি পর্যটক বাড়বে যা অর্থনীতিতে বিপুল পরিমাণ পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছে বিটিইএ। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড ২০২৩ প্রশ্ন ব্যাংক’ শীর্ষক বইটির প্রশংসা করে বলেন, প্রায় ৮৬ লক্ষ শিক্ষার্থীর মাঝে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে নতুনভাবে তুলে ধরতে সহায়তা করবে বলে আমার ধারণা। তিনি ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড ২০২৩’ এর আয়োজন করায় বিটিইএ-কে ধন্যবাদ জানান এবং অলিম্পিয়াডের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ)এর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাগর ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড ২০২৩’ এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড’ স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্তীদেরকে পর্যটন সম্পর্কে অবহিত করতে সহায়তা করবে এবং এর সাথে যুক্ত করার মাধ্যমে দেশপ্রেমের নতুন দৃষ্টিভঙ্গিও সূচনা হবে। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ এই চার শ্রেণীতে প্রায় ৮৬ লাখের বেশি শিক্ষার্তী রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর পরিবারে ৫জন করে সদস্য থাকলে মোট দেড় কোটির বেশি মানুষ সরাসরি বঙ্গবন্ধু ও পর্যটন শিল্প সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও সমাজসেবক সহ আরও প্রায় দেড় কোটি মানুষ মিলে মোট তিন কোটিরও অধিক মানুষ বঙ্গবন্ধু ও পর্যটন শিল্প সম্পর্কে নতুন করে ধারণা পাবে। তিনি ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড ২০২৩’ এর সফল বাস্তবায়নে সরকার, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও সমাজসেবক সহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

দেশের প্রথম ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুরিজম অলিম্পিয়াড-২০২৩’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও অদম্য ইচ্ছে আর আগ্রহে পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মানিক রহমান (১৬) জিপিএ ৫ পেয়েছেন। তার দুটি হাত না থাকায় পা দিয়ে লেখেন।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। মানিক রহমান উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের মিজানুর রহমান ও মরিয়ম দম্পতি ছেলে।

এক পা দিয়ে লিখে জিপিএ ৫ পেলো কুড়িগ্রামের মানিক

৩৫ রন্ধনশিল্পী পেলেন ‘বিটিইএ বর্ষসেরা রন্ধনশিল্পী সম্মাননা-২০২২

রন্ধনশিল্পীরা নিজেদেরকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে গড়ে তোলার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে পারে ……র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি বলেছেন, রন্ধনশিল্পীরা নিজেদেরকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে গড়ে গড়ে তোলার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে পারে। আর পর্যটন শিল্প সমৃদ্ধ হলে দেশের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধি অর্জন করবে। তিনি দেশীয় রন্ধনশিল্পকে আরো শক্তিশালী করতে শেফ ও রন্ধন উদ্যোক্তাদেরকে বর্তমান প্রেক্ষাপটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও যুগোপযোগি করে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ)-এর উদ্যোগে আজ ২২ অক্টোবর ২০২২, শনিবার সকাল ১০টায় শাহবাগস্থ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক শেফ ডে উপলক্ষ্যে ‘বিটিইএ বর্ষসেরা রন্ধনশিল্পী সম্মাননা-২০২২ এবং আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ)-এর চেয়ারম্যান জনাব শহিদুল ইসলাম সাগরের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই-এর পরিচালক এম.জি.আর. নাসির মজমদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলার্স ক্লাবের সভাপতি তৌহিদা সুলতানা রুনু, টোয়াবের পরিচালক জনাব বিল্লাল হোসেন সুমন, আইএসসি (ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট)-এর পরিচালক এস. এম. সাহাব উদ্দিন, বিশিষ্ট কালিনারি এক্সপার্ট ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার শাহিন আফরোজ এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিচসার্চ হাব এর সিইও প্রফেসর শাহরিয়ার পারভেজ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ)-এর ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান জায়েদী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের পরিচালক (অপারেশন) মাহবুব আলী খান (কিশোর)। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৩৫ রন্ধনশিল্পীকে ‘বিটিইএ বর্ষসেরা রন্ধনশিল্পী সম্মাননা-২০২২ প্রদান করা হয়। সবশেষে ফারদিন এ্যান্ড ফ্রেন্ডস ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক্যাল ব্যন্ড-এর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

৩৫ রন্ধনশিল্পী পেলেন ‘বিটিইএ বর্ষসেরা রন্ধনশিল্পী সম্মাননা-২০২২

বাংলাদেশের ভ্রমণ ও পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) ৪৫ বছর যাবৎ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আটাব Bangladesh International Travel and Tourism Expo (BITTE) নামক পর্যটন মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে। মেলা উপলক্ষ্যে ০৫ জুলাই ২০২২ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে BITTE এর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আটাবের সফল সভাপতি জনাব এস. এন. মঞ্জুর মোর্শেদ (মাহবুব)। তিনি তাঁর আলোচনায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে সম্পৃক্ত কিছু কার্যক্রম যেমন-প্রোডাক্ট ব্রান্ডিং, বিদেশি মুদ্রা অর্জনে দেশের পর্যটন সেবার মান উন্নয়ন ও বিক্রির বাজার সৃষ্টি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফ্যাম ট্যুর, পর্যটন শিল্পের প্রচার-প্রসার, ঐতিহ্যবাহী খাদ্য প্রদর্শন, বিভিন্ন দেশের এ্যাম্বাসী, হাইকমিশনগুলোর সাথে সু-সম্পর্ক স্থাপন, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে দৃঢ় ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তোলা, দেশের পর্যটন সচেতনতা বৃদ্ধি, বিভিন্ন সেমিনার, গোল টেবিল আলোচনা, কর্মশালা, বিটুবি সেশন, পর্যটন সেবাগুলো দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম প্রদর্শনীর পরিকল্পনার কথা উপস্থাপন করেন। তিনি জানান আগামী ০১ থেকে ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আটাব কর্তৃক Bangladesh International Travel and Tourism Expo (BITTE) আয়োজিত হতে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, এসএমই ফাউন্ডেশন, প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর, এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ ট্যুরিষ্ট পুলিশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, ভুটান এ্যাম্বেসীসহ অন্যান্য এ্যাম্বেসী, সৌদি এয়ারলাইন্স, শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স, এমিরেটস, কাতার, এয়ার এরাবিয়া, ইউএসবাংলা, নভোএয়ার এবং জাজিরা এয়ারওয়েজ সহ অন্যান্য এয়ারলাইন্স এর প্রতিনিধি, বিভিন্ন জিডিএস-অ্যামাডিউস, গ্যালিলিও, ছেবার, টোয়াব, বিডি ইনবাউন্ড, ট্রিয়াব, টিডাব সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আটাবের সম্মানিত মহাসচিব জনাব আবদুস সালাম আরেফ, সহ-সভাপতি জনাবা আফসিয়া জান্নাত সালেহ, অর্থসচিব জনাব আব্দুর রাজ্জাক, পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি আতিকুর রহমান, কালচারাল সেক্রেটারি জনাব তোয়াহা চৌধুরী সহ আটাবের নেতৃবৃন্দ ও আটাব সদস্যবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইদের ধন্যবাদ জানানো হয়। তাদের লিখনী ও প্রচারের মাধ্যমে আটাবের কার্যক্রম ও BITTE মেলার প্রচারণার আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আটাব সদস্যদের সম্মানে ইন্টারকন্টিনেন্টালের সাথে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এর একটি সমঝোতা স্বাক্ষর (Memorandum of Understanding)  করে। যার ফলে সম্মানিত আটাব সদস্যবৃন্দ ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর সার্ভিসে বিশেষ সুবিধা ভোগ করবেন।

আবদুস সালাম আরেফ
মহাসচিব, আটাব।

আগামী ০১ থেকে ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আটাব কর্তৃক Bangladesh International Travel and Tourism Expo (BITTE) আয়োজিত হতে যাচ্ছে।

রংপুর বিভাগ সমিতি, ঢাকা-এর সন্মানিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন-এর সন্মানিত সাধারণ সম্পাদক
 জনাব আসাদুজ্জামান রিপন নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার, ঢাকা জেলা ।

ঢাকা জেলার নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার জনাব আসাদুজ্জামান রিপন

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ‘বঙ্গবন্ধুর পর্যটন দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও (বিটিইএ)-এর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (৩১ জুলাই) বিকেল ৪ টায় আগারগাঁও পর্যটন ভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। গেষ্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই-এর পরিচালক জনাব এমজিআর নাসির মজুমদার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের কিউরেটর জনাব এনআই খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক জনাব সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সদস্য জনাব মো. রাফেউজ্জামান, ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্রিয়াব)-এর সভাপতি জনাব খবির উদ্দিন আহমেদ, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর সভাপতি জনাব শিবলুল আজম কোরেশি এবং ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলাস ক্লাব লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট তৌহিদা সুলতানা রুনু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিইএ)-এর চেয়ারম্যান জনাব শহিদুল ইসলাম সাগর। উক্ত অনুষ্ঠানে বিটিইএ-এর নব নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি, বিটিইএ-এর ন্যাশনাল ওম্যান স্ট্যান্ডিং কমিটি ও বিটিইএ-এর ঢাকা ওম্যান স্ট্যান্ডিং কমিটি ঘোষণা করা হয়।

বিশিষ্ট পর্যটন ব্যবসায়ী  সমাজ সেবক,  বিএম ট্রাভেলস্ এন্ড  ট্যুরিজম  এর কর্নধার মোঃ রবিউল ইসলাম রবি কে ২০২২২৪ অর্থ বছরের জন্যবাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্সএসোসিয়েশন বিটিইএ এর পরিচালক প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স হিসাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ।

নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ পাঠ করান বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। আগামী দুইবছর এই কমিটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

প্রধান অতিথি জনাব র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর পর্যটন দর্শনকে সামনে রেখে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে হবে এবং পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

 

বিএম ট্রাভেলস্ এন্ড  ট্যুরিজম  এর কর্নধার মোঃ রবিউল ইসলাম রবি কে ২০২২- ২৪ অর্থ বছরের জন্য, বিটিইএ এর পরিচালক প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স হিসাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ।

গতকাল ৩১ জুলাই-২০২২ রোববার বিকেল চারটায় আগারগাঁও পর্যটন ভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর পর্যটন দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও (বিটিইএ)-এর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি ।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। গেষ্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এফবিসিসিআই-এর পরিচালক জনাব এমজিআর নাসির মজুমদার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের কিউরেটর জনাব এনআই খান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক জনাব সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সদস্য জনাব মো. রাফেউজ্জামান, ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্রিয়াব)-এর সভাপতি জনাব খবির উদ্দিন আহমেদ, ট্যুর অপেিরটরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর সভাপতি জনাব শিবলুল আজম কোরেশি এবং ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলাস ক্লাব লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট তৌহিদা সুলতানা রুনু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ)-এর চেয়ারম্যান জনাব শহিদুল ইসলাম সাগর।

উক্ত অনুষ্ঠানে বিটিইএ-এর নব নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি, বিটিইএ-এর ন্যাশনাল ওম্যান স্ট্যান্ডিং কমিটি ও বিটিইএ-এর ঢাকা ওম্যান স্ট্যান্ডিং কমিটি ঘোষণা করা হয়। নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ পাঠ করান বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। আগামী দুইবছর এই কমিটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। প্রধান অতিথি জনাব র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি বলেন “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর পর্যটন দর্শনকে সামনে রেখে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে হবে এবং পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ”

বার্তা প্রেরক শেখ শিউলী আক্তার পরিচালক মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন। বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন (বিটিইএ) ।

 বিটিইএ-এর উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর পর্যটন দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও (বিটিইএ)-এর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত ।

“ইসলামের ইতিহাসে গাদীরে খুম্মের গুরুত্ব”—-মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী আরবী ১৮ জিলহজ্ব ১০ম হিজরী বৃহস্পতিবার ৬৩২ ঈসায়ী ইসলামি ইতিহাসের একটি স্মরণীয় ঐতিহাসিক দিন। জিলহজ্বের এ দিনটি “গাদীর খুম” দিবস নামে পরিচিত। দশম হিজরীর এ দিনে রাসুলে কারীম রাউফুর রাহীম সাঃ যে ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন সেই আলোকে মুসলিম উম্মাহ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দিনটি উদযাপন করে থাকে। আল্লাহর রাসুল সাঃ এটা জানতেন যে প্রত্যাদেশ বাণী বা আল্লাহ প্রদত্ত মানবের জীবন বিধান পূর্ণতা লাভ করার পর তিনি বেশি দিন ইহজগতে থাকবেন না। তাই নবম হিজরীর পর থেকেই মূলত তিনি এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছিলেন। ঐ সময় ইসলামের ভবিষ্যৎ নিয়ে দ্বিধা- দ্বন্দ ও সংশয় সৃষ্টির জন্যে কাফের মুশরেকদের পক্ষ থেকেও জোর তৎপরতা শুরু হয়েছিল। তারা প্রচার করতো ইসলামের নবীর কোন পুত্র সন্তান নেই , কাজেই তার মৃত্যু হলে ইসলাম ধর্মের অস্তিত্বও আস্তে আস্তে বিলিন হয়ে পড়েবে। এমন এক অবস্থায় মুসলমানদের মনে কিছুটা অস্বস্তি বিরাজ করছিল।
সাহাবায়ে কেরাম রাঃ এটা দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করতেন ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত মানব জীবন বিধান । এটা চিরস্থায়ী এবং পূর্ণাঙ্গ। পবিত্র কোরআন হচ্ছে মানব জাতির জন্যে সর্বশেষ ঐশি শ্বাশত গ্রন্থ এবং হযরত মুহাম্মদ সাঃ হচ্ছেন সর্বশেষ নবী এবং রাসুল। কাজেই দ্বীন ইসলাম চিরকাল টিকে থাকবে । ইসলামের বিধান শ্বাশত, অমর ও অক্ষয়। যতদিন এ জগত থাকবে ইসলামের দেদীপ্যমান দ্বীপ্তি আলো বিকিরণ করে যাবে। এ আলো নিভিয়ে দেয়ার ক্ষমতা কোন শক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। জাজ্বল্যমান এই বিশ্বাসকে ধারণ করার পরও মুসলমানদের মনে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। আল্লাহর রাসুলের ইহলোক ত্যাগের সম্ভাবনায় একদিকে তাদের মনে ছিল বিরহজনিত অন্তর্দাহ।
অন্যদিকে ইহুদী, খৃষ্টান ও পৌত্তলিকদের অব্যাহত চক্রান্তের কথা ভেবে তারা ইসলামের ভবিষ্যতের ব্যাপারেও নানা দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলেন । সবার কাছে এই প্রশ্নটিই বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল, প্রিয় নবীজী যখন এ জগতে থাকবেন না, তখন পবিত্র কোরআনকে ব্যাখ্যা করবেন, মুসলমানরাই বা জীবন জিজ্ঞাসার জবাব জানার জন্যে কার দ্বারস্থ হবেন?
ইতোমধ্যে হজ্বের সময় ঘনিয়ে এল। রাসুলে কারীম সাঃ মুসলমানদেরকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র হজ্ব পালন করলেন। এটাই ছিল আল্লাহর রাসুলের শেষ হজ্ব । বিদায় হজ্ব নামে যা আজও পরিচিত। হজ্বের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নবীজী এবার লক্ষ মুসলমানদের কাফেলাকে সঙ্গে নিয়ে মাতৃভূমি মক্কাকে বিদায় জানালেন, চলছেন প্রিয় মদিনার পথে। আল্লাহর রাসূলকে খুবই চিন্তিত মনে হচ্ছিল, এটা বিশিষ্ট সকল সাহাবিই লক্ষ্য করলেন। সবার মনেই এক অজানা আশঙ্কা। এমন সময় কাফেলা গাদীরে খুম নামক এক স্থানে এসে পৌঁছায় ।
ছোট্ট জলাশয় বা ডোবাকে আরবীতে গাদীর বলা হয়। গাদীরে খুম নামক স্থানটি মক্কা ও মদীনার মাঝামাঝি হেজাজের রাগিবের নিকটবর্তী জুহফার মসজিদের পার্শ্ববর্তীতে অবস্থিত । মরু আরবের মুসাফির বা বাণিজ্য কাফেলাগুলো সাধারণত এই ছোট্ট জলাশয়ের পাশে সাময়িক বিশ্রামের জন্যে অবস্থান করতো । আল্লাহর রাসুল যখন এই স্থানে এসে পৌঁছলেন তখন হযরত জিব্রাইল (আ) সুরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াত নিয়ে হাজির হলেন । বলা হলো- “হে রাসুল ! তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা তুমি সবার কাছে পৌঁছে দাও , যদি তা না কর তাহলে তো তুমি তার বার্তা প্রচার করলে না । ”
রাসুলে রাব্বুল আ’লামীন সাঃ আল্লাহর নির্দেশ পাওয়ার পর তিনি সবাইকে গাদীরে খুম নামক স্থানে সমবেত হতে বললেন। যারা কিছুটা এগিয়ে ছিলেন তারা পিছনে ফিরলেন। আর যারা পিছনে ছিলেন তারা এগিয়ে এলেন। রৌদ্রস্নাত উত্তপ্ত মরু হাওয়ায় সবাই ক্লান্ত অবসন্ন । তারপরও সকলেই প্রবল মনোযোগ সহকারে অপেক্ষা করতে লাগলেন আল্লাহর রাসুল কি বলবেন তা শুনার জন্য। আল্লাহর রাসুল উটের জিনকে মঞ্চের মত করে তাতে আরোহণ করলেন। এরপর সমবেত সকলকে লক্ষ করে বললেন, ”হে মুসলিমগণ! অচিরেই আমার জীবনের অবসান ঘটবে, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে এ জগত থেকে চলে যেতে হবে আমাকে। আমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল ।
আমি কি আমার উপর অর্পিত রিসালাতের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পেরেছি? সকলেই সমস্বরে বলে উঠল, হে আল্লাহ নবী ও রাসূল ! আপনি আপনার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন এবং এ পথে আপনি অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করেছেন। এরপর আল্লাহর রাসুল সাঃ চারদিকে তাকিয়ে হযরত আলীর দুই হাত উত্তোলন করে বললেন, মহান আল্লাহ হচ্ছে আমার অলী এবং রক্ষণাবেক্ষণকারী। আমি হচ্ছি মুমিন বিশ্বাসীদের অলী ও অভিভাবক, আর আমি যার নেতা ও অভিভাবক, আলীও তার নেতা ও অভিভাবক। হে আল্লাহ! যে আলীকে বন্ধু মনে করে তুমি তাকে দয়া ও অনুগ্রহ করো, আর যে আলীর সাথে শত্রুতা করে, তুমি তার প্রতি একই মনোভাব পোষণ করো । রাসু্লে সাঃ এর এই ভাষণের পরপরই হযরত জিব্রাইল (আ.) আবার অহী বা প্রত্যাদেশ বাণী নিয়ে এলেন। বলা হলো “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন বা জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম ।
( সুরা মায়েদার ৩ নম্বর আয়াত ) গাদীরে খুমের ঐতিহাসিক ঘোষণায় আল্লাহর রাসুল কার্যত হযরত আলীকে তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবেই নিযুক্ত করেছিলেন । তাই আমরা লক্ষ্য করি তাবুক অভিযানের সময় নবী করিম সাঃ এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে। কিন্তু নবীজী হযরত আলীকে মদিনায় থেকে যেতে বললেন। হযরত আলী রাঃ এর কারণ জানতে চাইলে আল্লাহর রাসূল উত্তরে বলেছিলেন, ”তুমি কি চাও না মুসার স্থলে হারুন যেমন ছিল, তেমনি আমার স্থলেও হোক তোমার স্থান। যদিও আমার পরে আর কোন নবী বা রাসুল আসবে না। রাসুলে খোদা সাঃ এর অসংখ্য উক্তি বা বক্তব্যের আলোকে মুসলিমদের একটা বড় অংশ বিশ্বাস করেন, মহানবী সাঃ এর পর মুসলিমদের নেতৃত্ব বা পবিত্র কোরআনের যথার্থ ব্যাখ্যার দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছিল হযরত আলী রাঃ এর উপর। তিনি মুসলিমদের ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন, আর এই দায়িত্ব চূড়ান্তভাবে অর্পিত হয়েছিল গাদিরে খুমের ঐতিহাসিক স্থানে।
ইসলাম নবী করিম সাঃ এর সাহাবাদের স্থান ও মর্যাদা অত্যন্ত উঁচুতে। সত্য ও ন্যায়ের ঝাণ্ডাবাহী সাহাবায়ে কেরামের ত্যাগ ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইসলাম আদর্শ জীবন বিধান হিসেবে পৃথিবীজুড়ে বিকশিত ও প্রসারিত হয়েছিল। নূরনবীর সাহাবীগণ উত্তম চরিত্র, উন্নত ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ত্যাগের যে আদর্শ স্থাপন করে গেছেন, তার দ্বিতীয় উদাহরণ মানব ইতিহাসে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। তাই সত্যকামী নবীজীর প্রত্যেক সাহাবীই ইসলামের ইতিহাসের এক একটি নক্ষত্র। অগণিত নক্ষত্রের একজন হয়েও সন্ধ্যা তারা যেমন সূর্যের বর্ণচ্ছটায় উজ্জল, হযরত আলী রাঃ তেমনি বিশ্বনবীর নৈকট্য মহিমায় ইমামতের দ্বীপ্তিতে উজ্জ্বল। দিবসের দ্বীপ্ত রবি অস্তমিত হওয়ার পর ঘনায়মান অন্ধকারের মধ্যে প্রশান্তির বাণী নিয়ে যেমনিভাবে গগণ কোণে সন্ধ্যা তারার উদয় হয়। বিশ্বনবীর অন্তর্ধানের পর আলোকবর্তিকা হিসেবে দিগভ্রান্ত ইসলামের গগণ কোণে দেখা দিলেন হযরত আলী রাঃ।
হযরত আলী রাঃ সম্পর্কে নবী করিম সাঃ বলেছেন, আলী প্রেম মানুষের পাপ এমনভাবে ধ্বংস করে যেমনি আগুন জ্বালানী কাঠ ধ্বংস করে দেয়। একবার হযরত আলীকে দেখে আল্লাহর রাসুল বলেছিলেন, তিনটি এমন বৈশিষ্ট্য তোমার রয়েছে যেটা আমারও নেই, এই তিনটি বৈশিষ্ট হচ্ছে, তুমি এমন একজনকে শ্বশুর হিসেবে পেয়েছে, যা আমি পাইনি, এমন একজনকে তুমি স্ত্রী হিসেবে পেয়েছে, যে কিনা আমার কন্যা, আর তৃতীয়টি হচ্ছে তুমি হাসান- হোসাইনের মত সন্তানের পিতা যেটা আমার নেই ।
গাদীরে খুম্মের বিষয়টি বিশ্বমুসলিম উম্মাহর জন্য নিঃসন্দেহে পাথেয়। সাইয়্যিদিনা আলী ইবনে আবু তালিব রাঃ গাদীরে খুম্মে রাসূলে কারীম সাঃ কর্তৃক তিনার স্থলাভিষিক্ত এটি ঐতিহাসিকভাবেই স্বীকৃত। উল্লেখ্য ইমাম আলী রাঃ এর সাথে মু’য়াবিয়ার উটের যুদ্ধ পরবর্তীতে ইমাম হুসাইন রাঃ কে সহপরিবারে মু’য়াবিয়ার পুত্র এজিদ কর্তৃক হত্যা যা ইতিহাসের পর্যালোচনায় পূর্ববর্তী গোত্রীয় নেতৃত্বের ক্ষমতার প্রতিশোধের নির্মম হত্যাযজ্ঞ । যেসকল মুসলিম ভাই ও বোনেরা সাইয়্যিদিনা ইমাম আলী রাঃ কে পাকে পাঞ্জনের অংশ হিসেবে আহলে বাইতের সদস্য মনে করেন এবং এও বলে বেড়ান যে তিনি যুবকদের মধ্যে প্রথম মুসলিম।
তাহলে বিষয়টি একটু ভেবে দেখুন স্ববিরোধী হয়ে গেলো কিনা ? এছাড়াও যারা আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা দেখান এবং পাশাপাশি মু’য়াবিয়া ও এজিদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন এটাও ঈমান বিধ্বংসের রীতির শামিল নয় কি? বস্তুত রাসূলে কারীম সাঃ এর পার্থিব লোকান্তরের পরবর্তী সময় খলিফা নির্বাচন থেকে শুরু করে কারবালার হত্যাযজ্ঞ পর্যন্ত সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আহলে বাইতের প্রতি অশ্রদ্ধা পূর্বগোত্রীয় প্রভাবের জাগরণ মুসলিম মধ্যে ফেৎনা সৃষ্টির ক্ষেত্র। তাই ইসলামের ইতিহাসের ঐতিহাসিক “গাদীরে খুম্মের গুরুত্ব” আরোপে ইসলামিক জীবন বিধান বাস্তবায়নে আহলে বাইতের প্রেমই মুসলিম উম্মার ঈমানী ঐক্যের একমাত্র পথ ও মত হওয়াটাই সমীচীন।
লেখকঃ
প্রধান সমন্বয়ক,
বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম।

“ইসলামের ইতিহাসে গাদীরে খুম্মের গুরুত্ব” — মুফতী মাসুম বিল্লাহ ।

জালালাবাদ মাদরাসায় আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে ।  মাদরাসার আয়োজিত মাহফিলে সভাপতিত্ব ও দোয়া পরিচালনা করেন অত্র জালালাবাদ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা দেশবরেণ্য হাফেজ বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ আলহাজ্ব হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব, প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ওলামা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী, ওলামা লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস, মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ মুশতাক, চট্রগ্রাম ওলামা লীগ নেতা মাওলানা আব্দুর রহীম ও হাফেজ মাওলানা নেজাম প্রমুখ। দোয়া পূর্ব মাহফিলে প্রধান অতিথি মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, আপনারা আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া-মাহফিলের আয়োজন করেছেন এতে আমি অনেক আনন্দিত। কেননা আপনারা দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। বঙ্গকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা কওমী মাদরাসার শিক্ষা সনদের এমএ সমমানের স্বীকৃতি দিয়ে আপনাদেরকে যে সম্মানিত করে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন তারই কৃতজ্ঞতায় এই দোয়া-মাহফিল। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ইসলামের মূল শিক্ষার প্রতি আন্তরিক এবং শ্রদ্ধাশীল। তিনি ইতিমধ্যে কওমী সনদের স্বীকৃতি, আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পাঁচশত ৬০টি মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠাসহ পঁচাত্তর হাজার কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করে তা প্রমাণ করেছেন। মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ইসলামের প্রচার-প্রসারের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাসহ ইসলামের খেদমতে বহুমুখী অবদান রেখেছেন। কৃতজ্ঞতার দোয়া-মাহফিল চার দালানের ভিতর সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা। শেখ হাসিনা ইসলামের জন্য বহুমুখী যে খেদমত করে যাচ্ছে তা মসজিদ মাদরাসার বাহিরেও ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে জনগণের মাঝে তুলে ধরবেন। তাহলেই কৃতজ্ঞতার প্রকৃত হক আদায় হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগের ধর্ম উপকমিটির সদস্য বলেন, ইসলামের অপব্যাখা করে একশ্রেণীর ক্ষমতালোভী স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আওয়ামী লীগ তথা সরকারের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা তাদের চক্রান্ত বাস্তবায়নে সরলমনা আলেম-ওলামাদেরকে মিথ্যাচারের মাধ্যমে উস্কানি দিয়ে বিভ্রান্ত করে অতীতের ন্যায় মাঠে নামানোর অপচেষ্টাও করতে পারে। আশা করি আপনারা সে চক্রান্তে পা না দিয়ে চলমান উন্নয়ন অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে ও দেশের শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষায় নাগরিকের দায়িত্ববোধে সজাগ থেকে দায়িত্ব পালন করে যাবেন ইনশাআল্লাহ। ধর্ম যারযার রাষ্ট্র সবার সম্মানিত আলেম সমাজকে এই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। আমরা চাই আগামীতে বীর চট্রলায় সর্বজনশ্রদ্ধীয় হুজুর হাফেজ তৈয়ব সাহেবের নেতৃত্ব দেশপ্রেমিক আলেম সমাজের এক অটুট ঐক্য গড়ুক। যে নেতৃত্বের মাধ্যমে গড়ে উঠবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ তরুণ আলেম সমাজের বহর। যারা অন্যায়ের প্রতিবাদে ভূমিকা রাখবে সাইয়্যেদানা উমর ইবনে খাত্তাব রাঃ ন্যায় আর অধিকার আদায়ে ভুমিকা রাখবে বিশ্বে শোষিত গণমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো। হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব দোয়ায় আল্লাহ সোবহানাহু তা’য়ালার দরবারে প্রধানমন্ত্রী’র সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা ছাড়াও সকল শহীদ মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুসহ পঁচাত্তরের শাহাদাতবরণ কারী সকল শহীদ ও জাতীয় চারনেতা এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ সকল শহীদদের রুহের শান্তি কামনা করেন। এছাড়াও মুনীজাতে দেশের শান্তি, উন্নয়ন-অগ্রগতিকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের কথা উল্লেখ করা হয়।

চট্রগ্রামের জালালাবাদ মাদরাসায় প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিশেষ দোয়া

https://www.facebook.com/bm24tvofficialpage