১৩ লাখ ডোজ টিকা মডার্না কোভ্যাক্সের আওতায় কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশে এসে পৌঁছছে ।
কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় বিশেষ ফ্লাইটে শুক্রবার রাত ১১টা ২২ মিনিটে মডার্নার টিকার প্রথম চালানে সাড়ে ১২ লাখ এবং শনিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে আরও সাড়ে ১২ লাখ ডোজ টিকা এসে পৌঁছেছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমেন ও টিকাকরণ কর্মসূচীর সদস্য সচিব ডাঃ শামসুল হক উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার সকালে কোভ্যাক্সের আওতায় মডার্নার আরও ১৩ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছছে। এই নিয়ে ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে মডার্না ও সিনোর্ফামের মোট ৪৫ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়। চলতি মাসের শেষের দিকে আরও টিকা বাংলাদেশে আসবে। এই সব টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে গণটিকাকরণ কর্মসূচীকে অব্যাহত রাখা হবে। নতুন করে নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশী, মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের এই টিকা দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকাকরণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ শামসুল হক জানান, শুক্রবার রাত ১১টা ২২ মিনিট থেকে শনিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের মধ্যে দেশে এসে পৌঁছেছে ৪৫ লাখ টিকা। এর মধ্যে মডার্নার টিকা ২৫ লাখ এবং সিনোর্ফামের ২০ লাখ। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সরকারের হাতে এসেছে এক কোটি ৬০ লাখ ছয় হাজার ডোজ টিকা। এর মধ্যে এ্যাস্ট্রাজেনেকার এক কোটি তিন লাখ ডোজ, সিনোফার্মের ৩১ লাখ ডোজ, মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ এবং ফাইজারের এক লাখ ছয় হাজার ডোজ টিকা রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী গ্যাভি-দ্য ভ্যাকসিন এ্যালায়েন্সের ব্যবস্থাপনায় কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এর আগে এই সুবিধার আওতায় একটি চালানে ফাইজারের এক লাখ ছয় হাজার ডোজ টিকা এসেছে দেশে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে চীনের সিনোফার্ম থেকে কেনা টিকার প্রথম চালানের ১০ লাখ এবং ভোর সাড়ে ৫টায় বিশেষ দ্বিতীয় ফ্লাইটে আরও ১০ লাখ ডোজ টিকা এসেছে।
চীনের বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্ট কোং লিমিটেডের কাছ থেকে এই টিকা কিনেছে সরকার। সিনোফার্মের কাছ থেকে মোট এক কোটি ৫০ লাখ ডোজ টিকা কেনার কথা রয়েছে।
গত ২৭ জুন দেশে অষ্টম টিকা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার করোনাভাইরাসের টিকার জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। এর আগে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড, রাশিয়ার স্পুতনিক, চীনের সিনোফার্ম, বেলজিয়ামের ফাইজার, চীনের সিনোভ্যাক, যুক্তরাষ্ট্রের জনসন ও সুইডেনের এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে। গত ৭ ফেব্রæয়ারি থেকে শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচীটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে স্থগিত করা হয়। ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় বাংলাদেশ গত ২৬ এপ্রিল প্রথম ডোজের কোভিড টিকা দেয়া বন্ধ করে দেয়। ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়াটিকেও ৫ মে থেকে স্থগিত করে দেয়া হয়।
চীন সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের মাধ্যমে ১৯ জুন থেকে আবারও সীমিত আকারে সরকার প্রথম ডোজের টিকা দেয়া শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত এই টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের টিকা প্রয়োগ চলছে। এছাড়া রাজধানীর ৮টি কেন্দ্রে মোট ফাইজারের টিকা দেয়া হচ্ছে।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, টিকা নিতে এখন পর্যন্ত মোট ৭২ লাখ ৭০ হাজার ৯৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। তাদেরকে এ্যাস্ট্রাজেনেকার এক কোটি এক লাখ নয় হাজার ৯২৮ ডোজ, সিনোফার্মের ৬৬ হাজার ২৩৮ ডোজ এবং ফাইজারের ৯২৪ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।